বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারী ২০২৫ - ১২:৪৮
সুরা লোকমানে ৯টি উপদেশ- যা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে!

হাওজা / অহংকার না করা, সংযতভাবে চলাফেরা এবং নম্রভাবে কথা বলার জন্য উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, গলার আওয়াজের মধ্যে গর্দভের গলাই সবচেয়ে শ্রুতিকটু।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, সুরা লোকমান পবিত্র কোরআনের ৩১তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এতে ৪ রুকু, ৩৪ আয়াত। যারা নামাজ পড়ে, জাকাত দেয় এবং পরলোকে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য পবিত্র কোরআন একটি একক কিতাব ও পথনির্দেশক। হযরত লোকমান হাকিম একটি পরিচিত নাম।

হযরত লোকমান স্বীয় পুত্রের প্রতি আল্লার একত্ব বা তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার, মা-বাবার সেবা, নামাজ আদায়, জাকাত প্রদান ও বিপদে ধৈর্য ধারণ সম্পর্কে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে। অহংকার না করা, সংযতভাবে চলাফেরা এবং নম্রভাবে কথা বলার জন্য উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, গলার আওয়াজের মধ্যে গর্দভের গলাই সবচেয়ে শ্রুতিকটু।

হযরত লোকমান তার ছেলেকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন, সে উপদেশগুলো মেনে চললে বদলে যেতে পারে জীবনে চলার ধরন।

উপদেশ–১: আল্লাহর কোনো শরিক করো না। আল্লাহর শরিক করা তো চরম সীমালঙ্ঘন।

উপদেশ–২: নামাজে অন্তরের হেফাজত করা। নামাজে দাঁড়ালে তখন মনকে স্থির রাখা কষ্ট হয়ে পড়ে। ধরা যাক কোনো একটা জিনিস হারিয়ে ফেলেছেন। অনেক খুঁজেও পাননি। দেখা যায়, নামাজে দাঁড়াতেই মনে পড়ে, জিনিসটা অমুক জায়গায় শয়তান মনকে স্থির থাকতে দেয় না। নামাজে দাঁড়ালেই সারা দিনের হিসাব কষে। নামাজে দাঁড়ালে কাজের রুটিন তৈরি করে। লোকমান হাকিম বলেন, নামাজের সময় অন্তরের হেফাজত কর।

উপদেশ–৩: খাবার ধীরেসুস্থে খাওয়া। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা খাবার ওপরে উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। একটু অসতর্কতায় বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য হযরত লোকমান হাকিম খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন।

উপদেশ–৪: অন্যের ঘরে গিয়ে এদিক-ওদিক না তাকানো। এ অভ্যাস থাকলে দূর করা উচিত। হযরত লোকমান হাকিম বললেন, অন্যের ঘরে যেন মানুষ চোখের হেফাজত করে। আপনার জন্য তারাও যেন লজ্জিত না হয় আপনিও যাতে লজ্জিত না হন।

উপদেশ–৫: কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে সংযত রাখা। অসতর্কভাবে কথা বললে বিপদ হতে পারে। বেশি কথা বললে নিজের মর্যাদার হানী হয়।

উপদেশ–৬: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্যও না ভুলে যাওয়া। মৃত্যুর কথা স্মরণ রাখা। কারণ যে কোনো সময় মৃত্যু চলে আসতে পারে।

উপদেশ–৭: আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কোরো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫২)। যার অন্তরে সব সময় আল্লাহর জিকির থাকবে, যার জিভ সব সময় আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ তাঁকে প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করে নেবেন।

উপদেশ–৮: কারো উপকার করলে সেটা একেবারেই ভুলে যাওয়া। কেউ কারও কাছে সহজে হাত পাতে না; অভাবে পড়ে কিংবা বিপদে পড়ে মানুষ সাহায্য চায়। উপকার করলে তা নিয়ে খোঁটা দেওয়া যাবে না।

উপদেশ–৯: কেউ আঘাত দিয়ে থাকলে ভুলে যেতে হবে অর্থাৎ তাকে ক্ষমা করে দেয়া, যাতে তার বিরুদ্ধে মনে প্রতিশোধ প্রবণতা তৈরী না হয়। কেননা এই প্রতিশোধ প্রবণতা মানুষের মানুষের অন্তরের শান্তি বিনষ্ট করে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের তাঁর প্রিয় হাবিব রাসুলুল্লাহ (সা.)  ও পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) আদর্শিক মুসলমান হিসেবে কবুল করুক। আমিন ইয়া র'ব্বাল আলামিন।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha